বৃষ্টিতে হাল্কা ভিজে আছে আলুখেত।বৃষ্টি দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের আলুচাষিরা। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলায় ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে দেখা যায়। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরও বলছে, ঢাকাসহ দেশের পাঁচ বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনার রয়েছে। কৃষকেরা বলছেন, ভারী বৃষ্টি হলে আলুর জমির অনেক ক্ষতি হবে। আলুখেতে অতিরিক্ত পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে বলেছে কৃষি অফিস।আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এর পরের ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। রোববার দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। সোমবার দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ার খবরে বলা হয়েছে, রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।গতকাল সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বেশির ভাগ জমিতে আলু রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। অনেক চাষি এখনো আলু রোপণ করছেন। এ অবস্থায় বৃষ্টি দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা।জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ১০ হাজারজন আলুচাষি অতিরিক্ত দামে বীজর আলু, জমিসহ প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ কিনে রোপণ করেছেন। এতে লাখ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। বেশির ভাগ জমিতে এখনো আলুগাছ গজায়নি। এ অবস্থায় আসন্ন বৃষ্টির শঙ্কায় দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতে হচ্ছে কৃষকদের।চাষিরা বলছেন, এ সময় বৃষ্টি হলে তাঁদের পথে বসতে হবে।রশুনিয়া ইউনিয়নের কৃষক আওয়াল শেখ বলেন, ‘এ বছর ৪ কানি (৫৬০ শতাংশ) জমিতে আলু রোপণ করেছি। এতে প্রায় ৬ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এখন ভারী বৃষ্টি হলে আলুর জমির অনেক ক্ষতি হবে।’ তিনি বলেন, ‘এখন ভারী বৃষ্টি হলে আমি এক রাতে পথে বসে যাব।আরেক কৃষক কাউসার হোসেন বলেন, ‘আমি ৩ কানি (৪২০ শতাংশ) জমিতে আলু রোপণ করেছি। চাষাবাদে গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ অনেক বেশি হয়েছে। এখন বৃষ্টির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটছে।’ তিনি বলেন, আলু অর্থকরী ফসল হওয়ায় সিংহভাগ কৃষক ধারদেনা ও ঋণ করে আলু রোপণ করেছেন। বৃষ্টি হলে আলুচাষিদের সব শেষ হয়ে যাবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, আলুখেতে অতিরিক্ত পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। তিনি জানান, উপজেলার ৯৫ ভাগ জমিতে বীজ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। বৃষ্টি মোকাবিলায় স্থানীয় কৃষকদের দিকনির্দেশনামূলক পরমার্শ দেওয়া হচ্ছে।এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আলু রোপণের আদর্শ সময় নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত। গত বছর ৮ হাজার ৭৫৫ হেক্টরে আলু রোপণ করা হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৮২০ হেক্টর নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় ৯ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আলু রোপণ হতে পারে।