জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজধানীর কাকরাইলে আগুন ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার-জনতার ব্যানারে বিক্ষুব্ধ জনতা আগুন ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটায়।বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা আগুন দেওয়ার পাশাপাশি লুটপাটও করেন।সরেজমিনে দেখা গেছে, সন্ধ্যার দিকে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে একদল লোক একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে যায় এবং সেখানে থাকা দলের পোস্টার এবং ব্যানার ছেঁড়া শুরু করেন। এ সময় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে থাকা উপস্থিত নেতারা ছাত্র-শ্রমিক-জনতাকে ধাওয়া দিয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে নিয়ে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন স্থানে ফোন দিয়ে সেখানে কয়েক শ মানুষ জড়ো করে। রাত সাড়ে আটটার দিকে সবাই মিলে কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা কাকরাইল মোড়ের দিকে পালিয়ে যান।এরপরই বিক্ষুব্ধরা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জড়ো হয়ে আগুন দেন। কার্যালয়ের দেওয়ালে থাকা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের খোদাই করা ছবি ও দলের লোগো শাবল দিয়ে ভেঙে ফেলেন। এ সময় বিক্ষুব্ধকারীরা জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে নানান ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। ‘জাতীয় পার্টি নিপাত যাক’, ‘ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টিকে রাজনীতিতে সুযোগ দেওয়া হবে না’, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’- ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা।ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা গণ অধিকার পরিষদের (নুরুল হক) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের দোসর। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।এ সময় কিছু লোককে দেখা যায় কার্যালয়ের ভেতর ঢুকে মালামাল লুট করছেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে আগুন নেভায়।এ ঘটনার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্টে বলেন, ‘জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেঈমানদের উৎখাত নিশ্চিত।এর কিছুক্ষণ পর হাসনাত আবদুল্লাহ আরেকটি পোস্টে লেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে রাত সাড়ে ৮টায় মিছিল নিয়ে তারা বিজয়নগরে যাবেন। ‘জাতীয় বেঈমানদের’ নিশ্চিহ্ন করতে হবে।পরে রাত ৯টার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য এবং সেনাসদস্যরা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে আসেন। তারা হামলাকারীদের সরিয়ে দেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব ছাড়াও নেতা-কর্মীদের নামে মামলা প্রত্যাহার এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আগামী শনিবার সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করে জাতীয় পার্টি। এই কর্মসূচি ঘোষণার পরই জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী শনিবার (২ নভেম্বর) বেলা ২টায় কাকরাইলে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। এছাড়া, জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা সমাবেশে বক্তৃতা করবেন। সমাবেশ শেষে সভাস্থল থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হবে।