মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
No menu items!
বাড়িজাতীয়প্রস্তুত গাবতলী পশুর হাট

প্রস্তুত গাবতলী পশুর হাট

ঈদুল আজহায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রধান ইবাদত হজ, ঈদের নামাজ ও কোরবানি। এ ঈদ ঘিরে প্রতি বছরই দৌড়ঝাঁপ করতে হয় পশুর হাট-বাজারে। রাজধানীতে ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি ভিড় জমে প্রধান ও স্থায়ী গাবতলী পশুর হাটে। এবার ঈদ উপলক্ষ্যে গাবতলী হাটের প্রস্তুতিও প্রায় শেষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে কোরবানির পশু। কেনা-বেচাও শুরু হয়েছে, তবে তা খুচরা ক্রেতা নয়; পাইকার, কসাই ও সাপ্লাই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পশু বিক্রি হচ্ছে এখন।

হাট মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের ১০-১৫ দিন আগেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলো সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। গাবতলী স্থায়ী পশুর হাটের পাশে অস্থায়ী হাটের প্রস্তুতিও শেষ পর্যায়ে।

ব্যাপারিরা বলছেন, হাট কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি থাকলেও এখনও জমেনি অস্থায়ী সেড। ক্রেতা সমাগম কম থাকায় কোরবানির হাট লক্ষ্য করে শ্রম-মমতায় লালনপালন করা গরু-ছাগল এখনই আনছেন না খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে হাটের স্থায়ী সেডে বেচাকেনা চলছে।

ব্যবসায়ীদের আশা, আগামী শুক্রবার থেকে পুরোদমে জমে উঠবে এ পশুর হাট। তখন ক্রেতাদের চাহিদা মতো নামবে কোরবানির পশু। এবার মাঝারি দামের পশু টার্গেট করে লাভের আশা করছেন তারা।

গতকাল সোমবার (১৯ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী স্থায়ী পশুর হাটের পশুর সেড বিভিন্ন রঙের ত্রিপলে সাজানো হয়েছে। ধোয়ামোছার কাজও চলছে। গতানুগতিক আঙ্গিকেই সাজানো হচ্ছে প্রধান ফটক। বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও র‌্যাবের জন্যও উঁচু ওয়াচ টাওয়ার। তবে এখনও ব্যাংক কিংবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য বুথ তৈরি হয়নি। বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী হাট।

সেখানে কথা হয় মানিকগঞ্জ সিংগাইরের ব্যাপারি আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গরুর সাইজ অনুযায়ী দাম। টুকটাক কেনা-বেচা হচ্ছে। আমি মাত্র চারটা গরু নিয়া এসেছি। সোয়া লাখ থেকে পৌনে দুই লাখের মধ্যে দাম।

তিনি বলেন, গত ঈদের বাজারে মাঝারির সাইজের গরুর বেশি চাহিদা ছিল। সেটা এবারও টার্গেট। এবার গরুর দাম পাবেন ব্যাপারিরা, যদি সীমান্তটা ভালোভাবে মনিটরিং করা যায়। কারণ ভারত থেকে গরু আসলে দাম কমে যাবে।

হাটের স্থায়ী সেডে কথা হয় যশোরের ব্যাপারি সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল ১৭টা গরু এনেছিলাম। এর মধ্যে ১৩টা বিক্রি করছি। বাকি আছে ৪টা। বড় পার্টি হাটে ঢুকছে। তারা ক্যান্টনমেন্ট, গুলশানে সাপ্লাই দিচ্ছে। কসাইরাও কিনছেন গরু।

কুষ্টিয়ার গরু ব্যবসায়ী খোরশেদ মিয়া বলেন, লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এবার গরুই তো কম। দেশি ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বরাবর বেশি।

ছাগল ব্যবসায়ী জাকির বলেন, ছাগলের কোরবানির হাঁকডাক শুরু হয়নি। কসাই, বিয়ে বা কোনো পার্টি অথবা রেস্তোরাঁর ক্রেতারা কিনছেন। ছাগল বেশি উঠেনি। ২৫ জুনের পর জমবে হাট।

গাবতলীর অস্থায়ী পশুর হাটের ম্যানেজার আবুল হাশেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদকেন্দ্রিক হাটের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। ঈদের এখনও ১০ দিন বাকি। ইতোমধ্যে পুলিশ কন্ট্রোল রুম, ওয়াচ টাওয়ারের কাজ শেষ। ১১টি হাসিল ঘরের মধ্যে ৮টির নির্মাণ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। হাট জমলে বাকি তিনটাও সম্পন্ন হবে৷ চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, বরগুনা, নাটোর, মেহেরপুর, রাজশাহী, পাবনা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানের ৬০ জন বড় ব্যাপারি ইতোমধ্যে সেড বরাদ্দ নিয়েছেন। সেগুলোর কাজও প্রায় শেষ।

তিনি বলেন, এবার হাটের হাসিল লেখার জন্য লোক নিয়োগ করা হয়েছে ৪০০ জন। স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে দুই বেলা মিলে ৮০০ জন। স্থায়ী টয়লেট কিছু আছে। অস্থায়ীভাবেও কিছু বসানো হবে।

‘কোরবানির পশু এখনও আসা শুরু হয়নি। তবে ১২ মাস যারা এই স্থায়ী পশুর হাটে ব্যবসা করেন সেসব ব্যবসায়ী গরু-খাসিসহ অন্যান্য পশু আনছেন কোরবানি উপলক্ষ্যে। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও হাসিল একই থাকছে হাটে। শতকরা ৫ টাকা, হাজারে ৫০ টাকা, লাখে পাঁচ হাজার হাসিল। গত কোরবানির ঈদে ছাগল, গরু, ভেড়া, মহিষ মিলে বিক্রি হয়েছিল ২০ হাজারের বেশি পশু।’

‘এবার যদি হাটে পশুর সরবরাহ বেশি হয় তবে দাম কমবে, আর যদি কম হয় তাহলে বাড়বে দাম। তবে প্রতি বছরই সরকারি হিসাবে সাত শতাংশ বিক্রি বাড়ে। সেই হিসাবে এবারও পশু বিক্রি বাড়ার আশা করছি।’ হাট কবে থেকে পুরোদমে জমে উঠবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গাবতলী হাটে প্রতিদিনই বেচাকেনা হয়। তবে আগামী শুক্রবার ঈদের বেচাকেনা জমবে পুরোদমে।’

তথ্য সূত্রঃ ঢাকা পোস্ট

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মানবতার সেবায় কালিয়াকৈর গ্রুপ

টিভিতে আজকের খেলা