বহিরাগত লোক দিয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সবিচকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুর ২টার দিকে চেয়ারম্যান ও সচিবের কক্ষে ২০-৩০ জন বহিরাগত লোক নিয়ে গিয়ে লাঞ্ছিত করে।অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা হলেন- বোর্ডের সহকারি একাউন্টিং অফিসার আমিনুল করিম ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম। তারা আপন দুই ভাই। এই ঘটনার পর তাদেরকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।এ ঘটনায় সোমবার রাতে নগরীর রাজপাড়া থানায় এজাহারও দিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।ঘটনাসূত্রে জানা যায়, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সহকারি একাউন্টিং অফিসার আমিনুল করিম ও উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিমের বিরুদ্ধে আনিত বেশ কিছু অভিযোগের ফাইনাল শুনানির নির্ধারিত দিন ছিল সোমবার। এদিন দুপুরে এইচএসসি পুনঃনীরিক্ষণের রেজাল্ট সংক্রান্ত গোপনীয় কাজ করছিলেন শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. অলীউল আলম। এ সময় হঠাৎ করে ২০-৩০ জন লোক চেয়ারম্যানের কক্ষে প্রবেশ করে তার উপর চড়াও হয়। বোর্ডের ২০ কোটি টাকা বেসরকারি ব্যাংকে জমা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এনে তারা চেয়ারম্যানকে জেরা শুরু করেন।বোর্ডের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কথা বার্তার একপর্যায়ে চেয়ারম্যান রুম থেকে বের হতে চাইলে তারা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। তিনি সচিবের কক্ষে গেলে তারা সেখানে দরজা বন্ধ করে দু’জনকে আটকে দেয়। পরে পুলিশ ও বোর্ডের কর্মকর্তারা মিলে তাদের উদ্ধার করেন। পাশাপাশি বহিরাগতদের বের করে দেন।এবিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সচিব প্রফেসর মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু আভিযোগ প্রমানিত হয়েছে। এগুলো নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি চলছিল। তখন তারা হঠাৎ করে বাহির থেকে লোক এনে জোর করে আমাকে ও চেয়ারম্যানকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। তাদের দুজনকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. অলীউল আলম বলেন, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সহকারি একাউন্টিং অফিসার আমিনুল করিম ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম দুই ভাই। তাদের এক ভাইয়ের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির মামলা তদন্তাধিন আছে। সেই তদন্তে তিনি ভূয়া চিঠি দিয়ে থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। পরে বাদি বলেছেন ও লিখিত দিয়েছেন তিনি এটি করেননি। তিনি এই অভিযোগ চালিয়ে যেতে চান। আরেক ভাইয়ের বিরুদ্ধে গোপন নথি বাহিরে পাচারের অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে। এসব নিয়ে আজ ফাইনাল শুনানির দিন ধার্য ছিল। তাদের অভিযোগ ধামাচাপা দিতেই লোকবল নিয়ে তারা বাহিরাগতদের দিয়ে আমাদের অফিসে হামলা করেন। আমরা এটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করছি।এবিষয়ে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সহকারি একাউন্টিং অফিসার আমিনুল করিম ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিমের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিয়েও সেগুলো বন্ধ পাওয়া গেছে।নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতে শিক্ষা বোর্ডের সচিব হুমায়ূন কবীর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। মামলায় বোর্ডের দুই কর্মকর্তা অমিনুল করিম ও জাহিদুর রহিমসহ ৩০জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে।