তিনটি ক্যাটাগরিতে দেশ-বিদেশের প্রায় সাতশ দৌড়বিদের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে নরসিংদীর ‘রায়পুরা ম্যারাথন’ সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৫ টার দিকে উপজেলা চত্বর থেকে নরসিংদী- রায়পুরা আঞ্চলিক সড়কে গ্রামের মেঠো পথ ধরে হালকা কুয়াশায় আর সুন্দর গ্রামীণ প্রকৃতির মাঝে দৌড়বিদরা দৌড় শুরু করেন। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানা যায়, নরসিংদীর রায়পুরাকে সারাদেশসহ বিশ্বের কাছে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে ও নাগরিকদের সুস্থভাবে জীবনযাপনের জন্য এ আয়োজন। ৪২ কিলোমিটার ফুল ম্যারাথনে এক’শ দৌড়বিদ, ২১ কিলোমিটার হাফ ম্যারাথনে ৩শত দৌড়বিদ, ১০ কিলোমিটার প্রতিযোগিতায় ৩ শত দৌড়বিদ অংশ গ্রহণ করেন। ম্যারাথনে চীন, জাপান, আমেরিকা, নেদারল্যান্ড, রাশিয়া ও চেক রিপাবলিক ৬টি দেশের ১৬ জন নাগরিক ছিলেন। সারাদেশ থেকে আসা সব বয়সী নারী পুরুষ রানার ম্যারাথন প্রতিযোগীতায় অংশ নেন। এর আগে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এক হাজার দৌড়বিদ অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন করেন। এ নিয়ে রাত থেকে উপজেলাবাসীর মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষকরা গেছে। ভোর থেকে সড়কের দু’পাশে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় জমে। দৌড়বিদদের উৎসাহ অনুপ্রেরণা সাহস দেন। এতে দর্শকেরা খুবই আনন্দিত হন। তিনটি ক্যাটাগরি দৌড়ে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন কারি বিজয়ী হন।প্রতিযোগি ব্যাংকার মনুজ ও মোয়াজ্জেম হোসেন, মাইসাহ, চিকিৎস নাজমাসহ অনেকে জানান, হার কিংবা জিত নয়, শরীর ও মন ভাল রাখার জন্য দৌড়ে অংশগ্রহণই লক্ষ্য।সুস্থ থাকার জন্য দৌড়াই, দৌড়ানোর কারনে এখন অনেক সুস্থ আছি। খবর পেলেই আমরা বিভিন্ন স্থানে ম্যারাথনে অংশ গ্রহণ করে আসছি। রায়পুরায় গ্রামীণ পরিবেশে ম্যারাথন আয়োজনে অংশ গ্রহণ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ। ঢাকা থেকে আসা সত্তোরউর্ধ দৌড়বিদ সামসুল হাসান বলেন, দীর্ঘদিন যাবত দৌড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ম্যারাথনে অংশ গ্রহণ করি। স্বাস্থ্য মন ভালো রাখতেই বৃদ্ধ বয়সে এসেও এ চেষ্টা। তরুন প্রজন্মের প্রতি পরামর্শ আগামীতে শরীর সুস্থ রাখতে রানার্স হও। সবুজে ঘেঁড়া গ্রামীণ রাস্তার চারপাশে গাছপালা হলুদের মাঠ অসাধারণ মনোমুগ্ধকর পরিবেশ খুবই আনন্দ। গ্রাম্য লোকজন পথিমধ্য স্বাগত জানিয়েছে। আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানাই।ঢাকা থেকে আসা প্রতিযোগি সুবাহা মাহাদি সিদ্দিকী বলেন, মা’য়ের অনুপ্রেরণা রান শুরু করেছি। বিভিন্ন স্থানে পরিবারের সাথে দৌড়ে অংশ গ্রহণ করে থাকি। গ্রামের মেঠোপথে আজকের আয়োজনটা খুব ভালো লেগেছে।স্পনসর ওয়ারসন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ইন্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন, সারাদেশ থেকে আসা ৭০০ প্রতিযোগী রায়পুরায় ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করায় আমরা খুবই আনন্দিত। আগামীতে আমরা ২ হাজারের অধিক দৌড়বিদদের নিয়ে বড় পরিসরে আয়োজন করতে চাই।আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান বলেন, রায়পুরা উপজেলা প্রশাসন ও রায়পুরা রানার্স কমিউনিটির আয়োজিত অনুষ্ঠান সুন্দর ভাবে সম্পন করতে পারায় সকলকে ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানাই।রায়পুরা রানার্সের এডমিন ও আয়োজক কমিটির সমন্বয় সবুজ সিকদার বলেন, নিজে সুস্থ থাকতে রান করার বিকল্প নেই। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে এবং শরীরকে ভালো রাখতে যুবকদের রান করার জন্য উদ্ভোদ্ব করতেই রায়পুরাতে এ ম্যারাথনের আয়োজন। সামনেও তারচেয়ে বড় আয়োজন করতে চাই।আয়োজক কমিটির সদস্য আক্তারুজ্জামান বলেন, নিরাপত্তায় অর্ধশত সেনাবাহিনীর সদস্য, অর্ধশত পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য, আনসার ও গ্রামপুলিশ সদস্যসহ দুই’শ জন স্বেচ্ছাসেবীর পাশাপাশি চিকিৎসা সেবায় অ্যাম্বুলেন্সসহ একটি মেডিক্যাল টিম কাজ করে। এমনি ভাবে সকলের সহযোগীতা নিয়ে আগামীতে আরও বড় পরিসরে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। পরে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ এবং তৃতীয় স্থান অর্জন কারি বিজয়ীদের নগদ অর্থ সনদ ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। এ ছাড়াও সকল প্রতিযোগিদের ক্রেস্ট মেডেল সনদ উপহার দেন।