কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।এনিয়ে টানা পাঁচরাত ধরে কাশ্মির সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটল।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। গত সপ্তাহে কাশ্মীরের পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। পাকিস্তান থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা ভারতের কুপওয়াড়া ও বারামুল্লা জেলার বিপরীত এলাকা ও অখনুর সেক্টরের কাছে ঘটে।
ভারতীয় বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সোমবার (২৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে থেকে মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে পাকিস্তান সেনা বিনা উস্কানিতে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কুপওয়াড়া, বারামুল্লা ও অখনুর সেক্টরের বিপরীত এলাকাগুলোতে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালায়। ভারতীয় সেনারা সংযত ও কার্যকর উপায়ে এই উস্কানির জবাব দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে পাকিস্তানি সেনারা বিভিন্ন ভারতীয় অবস্থানের ওপর গুলি চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
পাহেলগাম হামলার পর ভারত সরকার বুধবার একগুচ্ছ কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে। হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন নেপালি নাগরিকও ছিলেন।
ভারতের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে ৬৫ বছর পুরনো সিন্ধু পানি বণ্টনচুক্তি স্থগিত করা, অটারি স্থল সীমান্ত বন্ধ করা ও পাকিস্তানি দূতাবাসের সামরিক কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করা।
জবাবে ইসলামাবাদ হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, তারা দিল্লির সঙ্গে সব চুক্তি, এমনকি ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিও স্থগিত করতে পারে। উল্লেখ্য, শিমলা চুক্তি জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের নিয়ন্ত্রণ রেখাকে বৈধতা দেয়।
জাতিসংঘে পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ ভারতেরসোমবার জাতিসংঘে পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ করেছে ভারত। কারণ, সম্প্রতি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স্বীকার করেছেন যে, পাকিস্তান সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে ‘সমর্থন, প্রশিক্ষণ ও অর্থায়ন’ করে এসেছে।
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর স্কাই নিউজের এক সাংবাদিক খাজা আসিফকে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘গত তিন দশক ধরে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশ ও যুক্তরাজ্যের হয়ে এই নোংরা কাজ করে আসছি।’
জাতিসংঘে ভারতের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি যোগনা প্যাটেল বলেন, এই স্বীকারোক্তি ‘কোনো বিস্ময়কর ব্যাপার নয়’, বরং এটি পাকিস্তানকে ‘একটি দুষ্কৃতিকারী রাষ্ট্র’ হিসেবে উন্মোচিত করেছে। যারা বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করে চলেছে।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি এক টিভি সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে, পাকিস্তান সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সমর্থন, প্রশিক্ষণ ও অর্থায়নে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ছিল। বিশ্ব আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না।’
যোগনা প্যাটেল পাহেলগাম হামলার পর ভারতের প্রতি বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের ‘স্পষ্ট ও জোরালো সমর্থন এবং সংহতি’ প্রদর্শনের জন্যও ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, এটি প্রমাণ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সন্ত্রাসবাদের প্রতি একেবারেই শূন্য সহনশীলতা দেখাচ্ছে।