প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। তিনি বলেছেন, চুক্তি করার জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন আর দেরি করা যাবে না।
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেছেন, কানাডা ও মেক্সিকোর জন্য কোনো জায়গা নেই। শুল্ক ইতোমধ্যে নির্ধারিত হয়েছে। এটি আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকেই কার্যকর হবে।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘স্পষ্ট করে বলছি, যদি ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে আমরাও প্রস্তুত।’
তিনি বলেন, অটোয়া মার্কিন আমদানি পণ্যের ওপর ১৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। প্রাথমিকভাবে ৩০ বিলিয়ন ডলারের শুল্ক তৎক্ষণাৎ কার্যকর হবে। প্রাথমিকভাবে পাস্তা, পোশাক ও পারফিউমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর এসব শুল্ক বসানো হবে।
জোলি উল্লেখ করেন, কানাডা বাণিজ্যযুদ্ধ চায় না। কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্র যদি শুরু করে, তাহলে তারাও জবাব দেবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এই শুল্ক আরোপ ‘আমাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি’, এর ফলে ‘কানাডার হাজার হাজার চাকরি ঝুঁকির মুখে’ আছে।
মেক্সিকো ও চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এই ঘোষণা বাণিজ্যযুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে। যদিও ট্রাম্প বলেছেন, এই শুল্ক আরোপের মূল কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ মাদক ও অভিবাসী স্রোত বন্ধ করা।
এই শুল্ক ফেব্রুয়ারিতেই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কানাডা ও মেক্সিকোর জন্য এক মাসের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক ফেব্রুয়ারিতেই কার্যকর হয়। যার ফলে এখন চীনের পণ্যের ওপর মোট ২০ শতাংশ শুল্ক বসছে।
ট্রাম্পের মতে, শুল্ক একটি কার্যকরী হাতিয়ার যা বাণিজ্যের ভারসাম্য রক্ষা করে। এটি মার্কিন শিল্পকে নিরাপত্তা দেবে। তিনি অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘যদি তারা যুক্তরাষ্ট্রেই কারখানা স্থাপন করে, তাহলে তাদের কোনো শুল্ক দিতে হবে না।’
ট্রাম্পের মন্তব্যের পর মার্কিন তিনটি প্রধান সূচকের পতন ঘটেছে। দাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ দিন শেষে ১.৪ শতাংশ, এসএন্ডপি ৫০০ ১.৭৫ শতাংশ ও নাসডাক ২.৬ শতাংশ কমেছে।
রোববার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল প্রবাহের জন্য দায়ী নয়। কারণ মার্কিন তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে আটক হওয়া ফেন্টানিলের মাত্র এক ভাগ কানাডা থেকে আসে।
কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) জানিয়েছে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানাইল পাচার রোধে ‘জোরালো’ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।কানাডার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যমন্ত্রী অনিতা আনন্দ সম্প্রতি ওয়াশিংটনে কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করে বলেছেন, এই সপ্তাহ শেষে একটি প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।চীনের রাষ্ট্র-চালিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, বেইজিং পাল্টা ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত। যা মার্কিন কৃষি ও খাদ্যপণ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।