আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ কিস্তি পূর্ব নির্ধারিত সময়ে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক সূত্র। তাদের দাবি- আগামী ১২ মার্চের আগে চতুর্থ কিস্তির ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না।সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সভা আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ কিস্তির ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি আলোচিত হবে।এর আগে অনুমোদন পেলে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই অর্থ বাংলাদেশ পাবে বলে আশা করা হচ্ছিলো। তবে বুধবার (২২ জানুয়ারী) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক সূত্র এই তথ্য (পূর্ব নির্ধারিত সময়ে ঋণ না পাওয়া) নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আইএমএফের কার্যক্রম এক মাস বন্ধ ছিলো। মূলত এ কারণেই বোর্ড সভার সময়সূচিতে পরিবর্তন এনেছে সংস্থাটি। এছাড়া ডলার দর বাজারে ছাড়ার বিষয়ে সংস্থাটি থেকে চাপ ছিলো। এক্ষেত্রে আমরা ইতোমধ্যে বাজারের কাছাকাছি চলে আসছি।তবে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, আইএমএফ’র চতুর্থ কিস্তি পেতে বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের শর্ত ও ডলার দর বাজারে ছাড়ার বিষয়ে সংস্থাটির আপত্তি। তবে এনবিআরের একটি সূত্র দাবি করছে, ঋণের চতুর্থ কিস্তি পেতে এনবিআরের দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। কারণ ইতোমধ্যে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।এ ছাড়াও বাংলাদেশ সরকার আইএমএফের কাছে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় আরও ৭৫ কোটি ডলার ঋণ বৃদ্ধির অনুরোধ করেছে, যা নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে। চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনর্গঠন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং আর্থিক খাতের টেকসই উন্নয়নে এই তহবিল ব্যবহার করা হবে।তবে ঋণ প্রদানে আইএমএফ কঠোর শর্ত আরোপ করেছে, যার মধ্যে ভ্যাট সংগ্রহ বৃদ্ধি, জ্বালানি খাতে ভর্তুকি হ্রাস, এবং আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার দাবি রয়েছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আইএমএফের শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশ সময়মতো ঋণ কিস্তি পাবে।বাংলাদেশ ২০২৩ সালে আইএমএফের কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন পেয়েছিল, যা অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা রাখছে।