শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫
No menu items!
বাড়িজাতীয়নারী দিবসে নারী শ্রমিকদের অধিকার ও মাতৃত্বকালীন ছুটির দাবিতে সমাবেশ

নারী দিবসে নারী শ্রমিকদের অধিকার ও মাতৃত্বকালীন ছুটির দাবিতে সমাবেশ

নারী শ্রমিকদের জন্য ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি, আইএলও কনভেনশন-১৯০ অনুসমর্থন এবং নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশন ও সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি (এসআরএস)।

শুক্রবার (৭ মার্চ ২০২৫) সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে জাতীয়  প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশ ও র‍্যালি থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী সভাপতি ও নারী নেত্রী আখি সুলতানা। তিনি বলেন, প্রতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়। এই দিনটি নারীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অর্জন উদযাপন করার পাশাপাশি লিঙ্গ সমতার জন্য আন্দোলন ও সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত। ১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত সমাজতান্ত্রিক আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেতা ক্লারা জেটকিন এই দিবসটি পালনের প্রস্তাব করেন। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ এই দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নারীরা কর্মক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তৈরি পোশাক শিল্প, গৃহকর্মী, কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা এবং গিগ ইকোনমিতে নারী শ্রমিকদের অবদান অপরিসীম। তবে, তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকরা ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি পান না, যা তাদের স্বাস্থ্য ও সন্তানের যত্নের জন্য অপরিহার্য। অনেক নারী মাতৃত্বকালীন ছুটির কারণে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়েন। এছাড়া কর্মস্থলে নারীদের প্রতি সহিংসতা, যৌন হয়রানি এবং বৈষম্যের ঘটনা ঘটছে। সরকার আইএলও কনভেনশন-১৯০ অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি এবং এখনও এই কনভেনশন অনুসমর্থন করেনি।

সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির প্রকল্প কর্মকর্তা এডভোকেট ফারুক হোসেন বলেন, নারী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা এবং কর্মস্থলে যৌন হয়রানি বন্ধের জন্য সরকার, মালিকপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। আইএলও কনভেনশন-১৯০ এর অনুসমর্থন ও বাস্তবায়ন, শ্রম আইন সংস্কার এবং শ্রম পরিদর্শন জোরদার করার মাধ্যমে নারী শ্রমিকদের জন্য একটি নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং সমতার ভিত্তিতে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুল হাসান নয়ন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারী শ্রমিকরা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন। তৈরি পোশাক শিল্প, কৃষি, গৃহকর্ম, তথ্যপ্রযুক্তি, গিগ ইকোনমি, সেবা খাত ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, কর্মক্ষেত্রে তারা নানা ধরনের বৈষম্য, হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। এসব সমস্যা সমাধানে শ্রম আইন সংশোধন, আইএলও কনভেনশন-১৯০ বাস্তবায়ন এবং কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

সমাবেশে বক্তারা নারী শ্রমিকদের ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা, আইএলও কনভেনশন-১৯০ অনুসমর্থন, কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন নির্যাতন বন্ধ, নারী শ্রমিকদের সমমজুরি নিশ্চিত করা, কর্মস্থলে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন এবং নারীদের উচ্চ পদে উন্নীত করার সুযোগ বৃদ্ধি সহ ২৬টি দাবি জানান। তারা সরকার, মালিকপক্ষ, ট্রেড ইউনিয়ন, নাগরিক সমাজ, অধিকারভিত্তিক সংস্থা ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

সমাবেশ শেষে একটি র‍্যালি বের হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
400


0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মানবতার সেবায় কালিয়াকৈর গ্রুপ

টিভিতে আজকের খেলা