রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
No menu items!
বাড়িজাতীয়ডেঙ্গু নিয়ে অবহেলায় বেড়েছে মৃত্যু

ডেঙ্গু নিয়ে অবহেলায় বেড়েছে মৃত্যু

ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে বিশেষভাবে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালটিতে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর (৮ তারিখ) মাসে আউটডোরে ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়েছেন ২৪ হাজার ৫৭ জন। ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন চার হাজার ৬৭২ জন। হাসপাতালটিতে চলতি বছর মারা গেছেন ৩১ জন রোগী। গত দুই মাসেই মারা গেছেন ২৯ জন।হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘হাসপাতালে যারা মারা গেছেন তাদের ৮০ শতাংশের হাসপাতালে আনার খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে। অধিকাংশের মৃত্যু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। এক-দুদিনের মধ্যে মারা গেছেন অন্যরা।মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও একই চিত্র বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের এক-তৃতীয়াংশই হাসপাতালে আসার এক থেকে দুদিনের মধ্যেই মারা গেছেন। হাসপাতালটিতে ১ জানুয়ারি থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ৬৪০ জন। এর মধ্যে ছাড়া পেয়েছেন ৩ হাজার ৫৩৭ জন। মারা গেছেন ৪৭ জন রোগী।মুগদা মেডিকেলে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে কর্তব্যরত একজন সিনিয়র নার্স জানান, হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গুরোগীর চাপ কমেছে। মাঝখানে অনেক বেশি ছিল। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সেবা দিচ্ছি। হাসপাতালে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের অনেকেই একেবারে শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে এসেছেন। এমন অনেক আছেন যারা জ্বর হওয়ার পর এলাকার ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খান। শেষ দিকে একেবারে খারাপ অবস্থা হওয়ার পরই আসেন। এমন সময় অনেকের ক্ষেত্রে করার কিছুই থাকে না।এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি রোগীদের দেরিতে হাসপাতালে আসার কারণে মৃত্যু বেশি হচ্ছে। এর মধ্যে কর্মক্ষম ব্যক্তিদের হাসপাতালে দেরিতে আসার হার সবচেয়ে বেশি। শিশু ও বড়দের যারা অন্যের ওপর নির্ভরশীল তারা হাসপাতালে আসেন। কিন্তু কর্মক্ষমরা অবহেলা করে শেষ মুহূর্তে এসে ভর্তি হন। সেই সময়ে তাদের চিকিৎসা দিয়ে বাঁচিয়ে তোলা কষ্টসাধ্য।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের তথ্য বিশ্লেষণ আমি করেছি। এতে দেখেছি যারা মারা গেছে তাদের ৮০ শতাংশই হাসপাতালে আসার একদিন বা দেড় দিনের মধ্যেই মারা গেছেন। খুব বেশি হলে দুদিন। এসব রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তারা একেবারে জটিল সময়ে আসছেন।তিনি বলেন, ‘রোগীদের যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে এনে যখন চিকিৎসা করার সুযোগ আছে তখনই এনে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। দেরি করে এলে চিকিৎসা দেওয়া কষ্ট হয়ে যায়।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে অনুযায়ী, ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মৃত্যু সবচেয়ে বেশি। ৫২৯ জন মৃতের মধ্যে ৫১ জনই এই বয়সী। শূন্য থেকে ২০ বছর বয়সীদের মধ্যে মারা গেছেন ৮৭ জন। ৫১ থেকে ৮০ বছরের বয়সীদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৭০ জনের।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ, মার্চে ছয়, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে ১২, জুনে আট, জুলাইয়ে ১৪, আগস্টে ২৭, সেপ্টেম্বরে ৮৭, অক্টোবরে ১৩৫, নভেম্বরে ১৭৩ এবং ডিসেম্বর মাসের প্রথম আট দিনে মারা গেছেন ৪১ জন।চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন জনসচেতনতা বৃদ্ধি। কারণ, এডিস মশার উৎপত্তিস্থল আমাদের বাড়ির ভেতর, আঙিনা, ছাদ ও বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা পানি। আমাদের উচিত বাড়ির আঙিনা সব সময় পরিষ্কার রাখা, আনাচে-কানাচে জমে থাকা অপ্রয়োজনীয় পাত্রগুলো ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া। কোথাও তিন দিনের বেশি পানি জমতে না দেওয়া। আক্রান্ত হলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে যেতে হবে, বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মানবতার সেবায় কালিয়াকৈর গ্রুপ

টিভিতে আজকের খেলা