অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে শেখ হাসিনার শাসনামলে এমনভাবে ধ্বংস করা হয়েছে যে, এটি এখন আরেকটি গাজার মতো। তিনি জানান, হাসিনার শাসন দেশের সব প্রতিষ্ঠান, নীতি, মানুষ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ধ্বংস করেছে, যা দেশকে পুনর্গঠন করতে এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।সোমবার (১০ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকারভিত্তিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার শাসন কোনো সরকার ছিল না, এটি ছিল একটি ডাকাত পরিবার। তাদের শাসনে সবই ছিল কেবল তাদের স্বার্থে। নির্বাচন, অর্থ, প্রশাসন—সব কিছু ছিল তাদের পরিবারের হাতে।
তিনি আরও বলেন, দেশের ব্যাংকগুলোকে ‘ফ্রি লাইসেন্স’ দেওয়া হয়েছিল সাধারণ মানুষের টাকা লুটে নেওয়ার জন্য এবং সরকার সেটা সহায়তা করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনার শাসন শেষ হওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে ফিরে দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব নেন। তার নেতৃত্বে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গোপন আটককেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, হাসিনার শাসনের সময় প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত হয়েছিল পুলিশের গুলিতে, যা জাতিসংঘের মতে মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে গেলেও ইউনূস দাবি করেন যে দেশের অবস্থা হাসিনার শাসনের তুলনায় ভালো।
এছাড়া, সাক্ষাৎকারে ইউনূস শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলেন, হাসিনার পরিবারের সদস্যরা ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, যা দেশীয় অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করেছে।
তবে, ড. ইউনূসের মতে, এখনও কিছু সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশকে পুনরুদ্ধারের। তিনি দেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী। তিনি আশা করেন যে, আগামী কিছু বছরের মধ্যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনরুদ্ধার হতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে আসা বিপ্লবের পর ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বলেন, আমরা একটি নতুন যুগে প্রবেশ করছি, যেখানে বাংলাদেশ তার হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করবে।