ক্যালেন্ডারের পাতায় বাজছে শীতের বিদায়ী ঘন্টা। কিছুদিনের মধ্যে বেলা ফুরাবে অতিথি পাখিদের, ফিরবে নিজ মাতৃভূমিতে। গাছে গাছে ফুলের মুকুল বার্তা দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সেজেছে প্রকৃতি। সবুজ আম গাছ ঢেকে গেছে হলদে মুকুলে।
মধুমাস ঋতুরাজ বসন্ত আসার আগাম বার্তা নিয়ে আসছে গাছে গাছে আমের মুকুল। এছাড়াও বসন্তকাল আসার আগমনে প্রায় প্রতিটি গাছে গাছে ফুল প্রকৃতিতে চারদিক যেন মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত হয়ে ওঠে।গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রতিটি বাড়ি ও আম বাগানে আমের মুকুলের গন্ধে মৌ মৌ করছে চারপাশ।
উপজেলায় দিন দিন বাড়চ্ছে হরেক রকমের সুস্বাদু আমের চাষ। আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা ফুল তুলিতে যায়। ফুলের মালা গলায় দিয়ে মামার বাড়ি যায়। ঝঁড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ। পাঁকা আমের মধুর রসে রঙ্গিন করে মুখ। পল্লি কবি জসিমউদ্দীনের মামার বাড়ি কবিতার পঙক্তিগুলো বাস্তব রুপ নিতে বাকি আর মাত্র কয়েক মাস।ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। এ মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত শ্রীপুরের প্রকৃতি। বাগান বা বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুুর পাড়ে ও রাস্তার পাশে আম গাছে মুকুলে মৌ মৌ গন্ধ।
উপজেলায় গাছগুলো আসতে শুরু করেছে আমের মুকুল। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আমের মুকুলের সেই পাগল করা ঘ্রাণ ও সুনশান নিরবতা ভেদ করে গাছে গাছে মধু সংগ্রহ করতে আসা মৌমাছিরা টানা গান গেয়ে যাচ্ছে।সোনালী স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে আম গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে চাষীরা। আম গাছে সেচ দেওয়া সহ আমের মুকুলে রোগবালাই দমনে বিভিন্ন কীটনাশক স্প্রে করছে তারা। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুল আসতে শুরু করেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন।
আম্রপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে। বাগান মালিকরা জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুলকে রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা বলেন, আমরা মাঠে মাঠে আম চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে থাকি। ইতিমধ্যে সকল আম গাছে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে যাতে আমের মুকুলের বোটা শক্ত হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার এ এস এম মূয়ীদুল হাসান জানান, আমাদের বাণিজ্যিক ভাবে তেমন কোন আমের বাগান নেই, তবে ছোট বড় আম বাগান ও বসতবাড়িতে আম চাষ হয়ে থাকে। সময় মত সামান্য বৃষ্টি হওয়া ও ঘন কুয়াশা না থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করেন তিনি। আম চাষে উৎসাহিত করতে এলাকার আম চাষীদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস।